আই,হু ডিড নট ডাই
পারভেজ চৌধুরী
কানাডার ভ্যাঙকুভারের একটি অফিসের ওয়েটিং রুমে পাশাপাশি বসে আছেন দুজন মানুষ। দুজনেরই মনে হচ্ছে একজন আরেকজনের খুব চেনা।একজন পার্সী ভাষার ইরাণী জাহেদ হাফতলাং অন্যজন আরবী ভাষার ইরাকী নাজাহ আবওদ। পরষ্পর পরিচিত হতে গিয়ে মনে পরে তাদের পুরানো দিনের কথা। ১৯৮২ সাল, ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন। ইরাক-ইরাণ যুদ্ধ। নাজাহ আবওদ জোড়পূর্বক যোগ দিতে বাধ্য হয় ইরাকী সেনা বাহিনীতে্। আবওদ ইরাকের অধিকৃত এক সীমান্তবর্তী এলাকায় গিয়ে আক্রান্ত হন পাশ্ববর্তী শত্রুপক্ষ দেশের ইরাণের সেনাবাহিনী কর্তৃক। ১৮ বছর বয়স্ক নাজাহ আবওদ ছাড়া সেনাবাহিনী ট্রুপের অন্যান্যরা নিহত হয়। ইরানী সেনাবাহিনী দলের সদস্য ১৩ বছর বয়স্ক জাহেদ হাফতলাংকে দায়ীত্ব দেয়া হয় পরাজিত শত্রুপক্ষ ইরাকী সেনাবাহিনীর ব্যাঙকারগুলিকে চেক করতে।সেখানে জীবিত কাওকে পেলে তাকে সরাসরি গুলি করে হত্যা করা হয়। জাহেদ মনে মনে প্রার্থনা করছিলেন যেন ব্যাঙকারে কেউ জীবিত না থাকে। একের পর এক পাচটি ব্যাঙকার চেক করে যখন ছয় নম্বর ব্যাঙকারে গিয়ে জাহেদ শুনতে পান একজন মানুষের আর্তনাদ, গোঙ্গানী তখন কাছে গিয়ে দেখেন তার শত্রুপক্ষের একজন আহত হয়ে কাতরাচ্ছে। সেখান থেকে আরবী ভাষার ইরাকী সেনা নাজাহ আবওদকে উদ্ধার করে আত্মপক্ষের সবার চোখ ফাকি দিয়ে দিনের পর দিন সেবা যত্ন করে সুস্থ করে তোলেন পার্সী ভাষার ইরাণী জাহেদ হাফতলাং। ক্রমশই শত্রু দুজনের বন্ধুত্ব হয়। যুদ্ধ শেষে যে যার মত নতুন করে শুরু করে জীবন। ২৫ বছর পর আবার মুখোমুখি দুই বন্ধুর, দুজন মানুষের স্বদেশের অন্যপ্রান্ত কানাডায়। এই নাটকীয় এবঙ সিনেমাটিক গল্পের প্রামাণ্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পুলিৎজার পুরস্কারপ্রাপ্ত অনুসন্ধানী সাংবাদিক মেরেডিথ মে, ২৮৮ পৃষ্ঠার এক মানবিক সর্ম্পকের দলীল “আই,হু ডিড নট ডাই” । প্রকাশকাল: ২০১৭। প্রকাশক: রেগান আর্টস, নিউর্য়ক।